মোবাইলের রিংটোন অনেকক্ষণ বেজে যাবার পর থেমে গেল। সাইনি রান্নাঘর থেকে ছুটে এসে মিসড্ কল খুলে দেখে — প্রিয়ম।
ডায়াল করল। ভেসে এল গান — তুমি যে কে আমার ... তুমি তা বোঝ না ...। অর্ধেক গানের মাঝে প্রিয়মের গলা।
— হাই ডার্লিং!
— কী সব গান লাগিয়েছ মোবাইলে ?
— কেন শুনতে খারাপ লাগছে !
— খারাপ লাগবে কেন। তবে আমি ছাড়া অন্য কেউ শুনলে ... ফোন করেছিলে কেন?
— অফিস ট্যুরে কলকাতা যাচ্ছি।
— বাড়ি আসার কথা ছিল না ?
— ইয়ার এনডিং চলছে ম্যাডাম। বাড়ি যাওয়া কি সম্ভব ? আগামী কাল পি আর টি মিটিং। রেভেন্যু ফল করছে, কেন টার্গেট অ্যাচিভ হয়নি। লাস্ট মান্থের ফলো আপ অ্যাকশন করেছেন কি না। নাউ টেল আস এন্ড সাবমিট ইয়োর এরিয়া প্রোগ্রাম রিপোর্ট ইন ডিটেইলস্। উফ্ পাঁচজন হাই পাওয়ার কমিটি মেম্বারদের সামনে যেন চাকরির ইন্টারভিউ দিচ্ছি ! এক নাগাড়ে বলে থামল প্রিয়ম।
— তুমি যে বলেছিলে পরশু বাড়ি এসে মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের সব ঝামেলা মেটাবে। পরশু বুবুনের জন্মদিনে প্যাড্ল কার কিনে দেবে।— ওসব পরে হবে। বুঝছ না, আগে চাকরি বাকি সব পরে।— মি. গুহ তো বাড়ি আসবেন, মিসেস গুহ বলেছেন। একই কোম্পানি ...।— আরে গুহ সাহেব তো এইচ আরের লোক। এডমিনিসট্রেশনে ইয়ার এনডিংয়ের ঝামেলা নেই। তাছাড়া দু’দিন আগে ওনাদের জি.এম কোঅর্ডিনেশন মিটিং হয়ে গেছে। আমি ফিনান্স এন্ড একাউন্টস ম্যানেজার। গোটা রিজিওনের ডিডিও। বুঝছ না।— বুঝেছি। বলেই মোবাইলটা অফ করে দিল। সাইনি বিরক্ত। হতাশ। বুবুনের জন্মদিনেও ছুটি নিতে পারল না লোকটা !আবার মোবাইল বাজল। একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকল যন্ত্রটার দিকে। আবার প্রিয়ম। এবার মোবাইলটার সুইচ অফ করে দিল প্রবল বিতৃষ্ণা আর অভিমানে।রাগ আর অভিমানে কেঁদে ফেলল সাইনি। কাজ আর কাজ।দুনিয়াশুদ্ধ লোক কাজ করে। তাই বলে পরিবারের প্রতি তার কোন দায়দায়িত্ব নেই ? মাসের পাঁচ তারিখে এসে সাত তারিখে হাওয়া। যত হ্যাপা সামলাবে সাইনি। ইলেকট্রিক বিল, এল.আই.সি, পোস্টাল ইনস্যুরেন্স, বুবুনকে স্কুলে পৌঁছানো, বাজার করা, গ্যাস বুক করা — সংসারের এমন হাজারো টুকিটাকি কাজ সামলে স্কুলে হাজিরা। প্রাইমারী টিচার বলে কি তার কোন ফুরসৎ নেই ? একবুক শ্বাস ছাড়ে সাইনি।ইংরেজী অনার্সের সেরা ছাত্রী ছিল সাইনি। বিয়ের পর ডিসটেন্সে এম.এ। ভালো রেজাল্ট। এস.এস.সি-তে বসেছিল। চাকরি পেয়েছিল মালদার কালিয়াচকের এক গন্ডগ্রাম স্কুলে। চাকরিতে জয়েন করতে দেয়নি প্রিয়ম। শিলিগুড়ির ফ্ল্যাটে কে থাকবে। বুবুন কোথায় পড়বে। চাকরি করার প্রয়োজনই বা কী। অগত্যা সাইনি হাইস্কুলের চাকরিতে না ঢুকে প্রাইমারী স্কুলের চাকরিই করে যাচ্ছে।রায়গঞ্জে কোম্পানীর ফ্ল্যাটে প্রিয়ম থাকে শেয়ারে। তার রুমমেট ম্যারেড ব্যাচেলার ডিভিশনাল ম্যানেজার। দিব্যি আছে ওরা দুজনে। রান্নার মাসি রান্না করে দেয়। আর দুই রুমমেট টিভি দেখে, রঙীন পানীয়ে গলা ভিজিয়ে রাত কাবার করে।প্রিয়মের ভাষায় ড্রিংক করলে মেজাজ খোলে। নো টেনশন। আরে ভাই টেনশন লেনে কা নেহি, দেনে কা। হাঃ হাঃ। বেজায় বকবক করে প্রিয়ম। প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথা বলার অভ্যাস। সাইনির একদম ভালো লাগে না।যত টেনশন শুধু সাইনির। সে যদিও প্রিয়মের মুখাপেক্ষী নয়। একরকম স্বাধীন। তবুও কোথায় যেন এক ধরনের নিঃসঙ্গতা তাকে কুড়ে কুড়ে খায়। তার মেয়েবেলা কেটেছে কোচবিহারে। এ.বি.এন শীল কলেজের স্নাতক। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট । — হোক না ডিসটেন্সের। তার বেতন খরচ হয় না বললেই চলে। প্রিয়ম তার স্যালারী থেকে তিরিশ হাজার টাকা মানি ট্রান্সফার করে দেয় শিলিগুড়ির ব্যাঙ্ক একাউন্টে। প্রয়োজন অনুযায়ী সাইনি এটিএম থেকে টাকা তোলে। শিলিগুড়িতে কেনাকাটায় ডেবিট কার্ডের সুবিধা পাওয়া যায়।সাইনির অসুবিধা তার একাকীত্ব। লোনলিনেস। শিলিগুড়ির কাছেই তার স্কুল। স্কুলের কাছেই বুবুনের ইংলিশ মিডিয়াম অকাদেমি। সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফেরে। তারপর অফুরন্ত অবসর। বিগ বাজার, কলকাতা বাজার , উত্তরায়ন সব ঝাঁ চকচক শপিংমলে বেশিরভাগ লোক জোড়ায় জোড়ায় যেতে পছন্দ করে। আর সে স্কুটি নিয়ে বুবুনকে বসিয়ে এদিক সেদিক ঘোরে। একদম ভাল্লাগে না তার। প্রিয়ম থাকলে আড়াই জনের পারফেক্ট ফ্যামিলির আনন্দ অন্যরকম। অন্ততঃ সাইনি তাই মনে করে। আগে প্রিয়ম প্রতি উইক এন্ডে রায়গঞ্জ থেকে শিলিগুড়ি আসতো। এখন মাসে শুধু একবার। অজুহাত একটাই, কাজের ভীষণ চাপ।ভাবনার অতলে ডুবতে ডুবতে খেই হারিয়ে ফেলে সাইনি। বিছানায় গা এলিয়ে প্রত্যাশা পূরণের হিসেব নিকেশ করছিল মনে মনে। হঠাং ডোর বেল বাজল। কে আসতে পারে এসময় ? ভ্রু কুঁচকে ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় নিজেকে এক পলক জরিপ করে দরজা খুলল সাইনি। আগন্তুককে দেখে সে অবাক। নিজের চোখকে বিশ্বাস হচ্ছিল না তার।তার সামনে দাঁড়িয়ে পলাশ !
— খুব সারপ্রাইজ দিলাম, না ?
— তা তো দিয়েছো।— ঢুকতে দেবে না ?
— ওহ সরি...। দরজার একপাশে সরে গিয়ে বলল — এসো।ঘরে ঢুকে পলাশ সোফায় গা এলিয়ে দিল।ড্রয়িংরুমের চারদিক চোখ বুলিয়ে উচ্ছ্বসিত গলায় বলল, ওয়াও ! দারুণ সাজানো গোছানো তো ! একেই বলে সোনামনির ঘর।সাইনির বিহ্বলতা তখনো কাটেনি। এক অদ্ভুত ঘোরে সে স্থির। সোনামনি তার ডাক নাম। তার মনে তখন নানা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে। নিজেকে যথাসম্ভব সংযত করে বলল— চা খাবে তো ?
— আলবাৎ খাবো। কতদিন তোমার হাতে চা খাইনি...।
পলাশ তৃষ্ণার্ত চোখ সাইনির গোটা শরীর ছুঁয়ে যাচ্ছিল। শিউড়ে ওঠল সাইনি।— তোমার কর্তাকে দেখছি না ?
— ও তো রায়গঞ্জে থাকে।— আর তুমি বুঝি বিরহিনী সেজে ঘর সামলাচ্ছো। হাঃ হাঃ তোমার কর্তাটি ভাগ্যবান মাইরি। প্রিয়ম তোমাকে ছেড়ে কেন যে অতদূরে থাকে...।সাইনি দ্রুত কিচেনে ছুটল। উত্তেজনায় তার বুক ওঠানামা করছে। পাঁচ বছর পর পলাশের আকস্মিক আগমন তাকে ভাবিয়ে তুলেছে। পলাশ যদি তার পাওনাগন্ডা দাবি করে বসে। পারবে কি সাইনি প্রতিরোধের দেয়াল তুলতে ? পারবে না। কারণ প্রিয়ম যেমন শান্ত ধীর স্থির, ঠিক তার বিপরীত পলাশ। বড্ড খোলামেলা, উদ্দাম, বেপরোয়া ধর্মের ষাঁড়। কে দিল তার ঠিকানা ?
চা-বিস্কুট ট্রেতে সাজিয়ে সেন্টার টেবিলে রাখল। সহজ হয়ে মুখোমুখি সোফায় বসল সাইনি।—হঠাৎ এতদিন পর মনে পড়ল ?
— মনে তো প্রতিদিন পড়ে। আজ সুযোগ পেয়ে সটান চলে এলাম আমার সোনামণিকে দেখতে। চায়ে চুমুক দিয়ে পলাশ বলল, ঠিক করিনি ?
— ঠিক করেছ... তবে আমার ঠিকানা কী করে পেলে ?
— তোমার দিদির কাছে। বিজয়োল্লাস পলাশের গলায়।আমার বাসাবাড়ির কাছেই থাকে ওরা।সাইনির দিদি লাবণি দিনহাটায় মদনমোহন পাড়ায় থাকে। জামাইবাবু জীবন বিমায় ডিও। পলাশ জানাল, সেও বর্তমানে দিনহাটা বদলি হয়েছে।পলাশ সোজাসুজি সাইনির মুখে তাকাল। গভীরভাবে নিরীক্ষণ করল। তার মনে হল সাইনি আগের তুলনায় আরও সুন্দরী হয়েছে। স্পষ্ট বুঝতে পারছে যে তার আকস্মিক উপস্থিতি সাইনিকে দ্বিধাগ্রস্ত করে তুলেছে। কেমন যেন আড়ষ্ট, জড়সর ভাবভঙ্গি। আগের সেই উচ্ছ্বল, উদ্দাম অভিব্যক্তি সাইনির মুখে নেই। পলাশ সহজ গলায় স্বগতোক্তি করল — আসলে শিলিগুড়িতে আমার কয়েকটা জরুরী কাজ আছে। এরিয়া ম্যানেজারের তলব পেয়ে ছুটে আসতে হয়েছে।— তুমি তাহলে কয়েকদিন শিলিগুড়িতে থাকবে ?
— থাকতেই হবে। ভেবেছিলাম তোমার এখানেই থাকব। কিন্তু প্রিয়মের অবর্তমানে থাকা ঠিক হবে না।— দাদার বাড়িতে থাকবে না তো হোটেলে থাকবে ?
— আমাদের কোম্পানীর একটা গেস্ট হাউস আছে। সেখানেও থাকা যেতে পারে...।
পলাশের গলায় প্রত্যাশার মৃদু স্বর।হাঁফ ছেড়ে বাঁচে সাইনি। পলাশ প্রিয়মের দূর সম্পর্কের তুতো ভাই। প্রায় সমবয়সী। সাইনির এককালের সহপাঠি এবং দুরন্ত প্রেমিক। ঘর বাঁধার স্বপ্ন ছিল। সব স্বপ্ন যেমন পূর্ণ হয় না তেমনি তাদের ঘর বাঁধার স্বপ্নও পূর্ণতা পায়নি। সাইনির মা-বাবা পলাশের অনিশ্চিত জীবনের চেয়ে প্রিয়মের স্থায়ী চাকরিকে অগ্রাধিকার দিয়েছিল বলেই চোখের জলে বিচ্ছেদ মেনে নিতে হয়েছে পলাশ আর সাইনিকে। সেই থেকে পলাশ আজও ব্যাচেলার।
— মাম্মি, বাবুয়া আমাকে মেরেছে। কাঁদতে কাঁদতে ঘরে ঢোকে বুবুন। অপরিচিত পলাশকে দেখে থমকাল একটু। তবে কান্নাভেজা গলায় আরও কিছু নালিশ করতে যাচ্ছিল, ঠিক সেই সময় বাবুয়ার আবির্ভাব।সেও কাঁদো গলায় নালিশ ঠুকল, বুবুন অকারণে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলেছে।দু’জনকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে আবার খেলতে পাঠাল সাইনি।— বুবুন বুঝি তোমার ছেলে ?
— মাম্মি, বাবুয়া আমাকে মেরেছে। কাঁদতে কাঁদতে ঘরে ঢোকে বুবুন। অপরিচিত পলাশকে দেখে থমকাল একটু। তবে কান্নাভেজা গলায় আরও কিছু নালিশ করতে যাচ্ছিল, ঠিক সেই সময় বাবুয়ার আবির্ভাব।সেও কাঁদো গলায় নালিশ ঠুকল, বুবুন অকারণে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলেছে।দু’জনকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে আবার খেলতে পাঠাল সাইনি।— বুবুন বুঝি তোমার ছেলে ?
— হ্যাঁ সবেধনমনি। চারে পা দিয়েছে। এর মধ্যে বেড়েছে দুষ্টুমি।
— আর বাবুয়া ?
— ও পাশের ফ্ল্যাটের। সোফা ছেড়ে ওঠল পলাশ। বলল, সে মাটিগাড়া যাবে। সেখানে তাদের ফিল্ড স্টাফ তার জন্য অপেক্ষায় থাকবে।— খাওয়া দাওয়া করে গেলে হয়না। সাইনির ভদ্রতাসূচক অনুরোধ।— নাহ্, আমাকে এক্ষুণি যেতে হবে। বলেই পলাশ পা বাড়াল।— ফিরে আসবে তো ?
— দেখি, বলতে পারছি না...। পলাশের তির্যক চাউনি। সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেল পলাশ।ব্যালকনি থেকে পলাশের যাওয়া লক্ষ করল সাইনি। ভাবনার জালে নিজেকে প্রশ্ন করল, কেন সে পলাশের সন্ধানী চোখ এড়িয়ে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করল ? কেন এই আত্মগোপন!আবার একা হয়ে গেল সাইনি। পলাশের প্রতি তার দুর্বলতা যে এখনও তিলমাত্র কমেনি, টের পেল। ক্ষণিকের উপস্থিতিতে তার বুকে যে আলোড়নের ঝড় উঠেছিল, কিছুটা সেই ঝড়ে সে বিধ্বস্ত।দুপুর গড়িয়ে বিকেলের আলো সামান্য নরম হতেই সাইনি আড়মোড়া ভেঙে ব্যালকনিতে এল। নীচে রাস্তা দিয়ে রিক্সা, গাড়ি, লোকজনের চলাচল বেড়েছে। এমন সময় সে দেখল পলাশ রিক্সা থেকে নামছে।— ফিরে আসতে বাধ্য হলাম। কৈফিয়ত দেবার ভঙ্গীতে একটু হাসল। প্রত্যাশা আর খুশির ঝিলিক তার চোখেমুখে। বলল, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দার্জিলিং বন্ধের জন্য সমতলের আদিবাসী বিকাশ পরিষদ ও আমরা বাঙালী আন্দোলনে নেমেছে। গোর্খাল্যান্ড দাবী কিছুতেই মানা যাবে না। বাস অটো বাগডোগরা যাচ্ছে না। মাটিগাড়ায় গাড়ি আটকে দিচ্ছে।পলাশ সাইনির দিকে তাকাল। সাইনির ভাবনা তাকে ডুবিয়ে রেখেছে সারাদিন। বুকে বাজছিল জলতরঙ্গ। দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন তাকে টেনে এনেছে শিলিগুড়ি। সে লক্ষ করল সাইনি ভীষণ চুপচাপ। অব্যক্ত চাপা যন্ত্রণার আভাস তার সারা মুখে।ঘরে ঢুকে শরবতের গ্লাস নিয়ে এল সাইনি। পলাশ হাতে নিয়ে বলল— দুপুরে খেয়েছো?
— টিফিন করেছি রেস্টুরেন্টে, তাতেই পেট ভরে গেছে।বেশ কিছুক্ষণ ঘরের বাতাস থমকে ছিল।সাইনি কিম্বা পলাশ কেউ কোন নতুন কথা খুঁজে পাচ্ছে না।— আজ তাহলে এখানে থাকতে পারি...। কাঁপা গলা পলাশের। সাইনি নিরুত্তর।— কোন অসুবিধা নেই তো তোমার ?
— অসুবিধা...। বলতে বলতে থেমে গেল সাইনি। প্রিয়মের অনুপস্থিতির সুযোগে পলাশ যদি কিছু দাবী করে, সাইনি নিজেকে সামলাতে পারবে তো ? প্রথম প্রেমের চোরাবালি চোরকাঁটার মতো। কখন যে চুপচাপ বিঁধবে টের পাওয়া মুশকিল। মিথ্যের আশ্রয় নিল সাইনি।
— আজ প্রিয়ম আসবে।—
প্রিয়ম আসবে ... আজ ? কই আগে বলোনি তো !
— বলার সুযোগ দিলে কোথায়। কষ্টের হাসি সাইনির ঠোঁটে।
— ওহ... তাহলে গেস্ট হাউসে উঠি, কী বলো ?
— সেই ভালো। বরং কাল এসে দেখা করে যেও। অনিচ্ছা সত্ত্বেও বিদায় নিল পলাশ।কাছাকাছি শাঁখের শব্দের সচকিত হল সাইনি।সন্ধ্যা নেমেছে। বিছানা ছেড়ে ওঠতে ইচ্ছে করল না তার। বুবুন তখনও ঘুমোচ্ছে। নিদ্রামগ্ন বুবুনের মাথায় হাত বুলিয়ে অলসভাবে চুমু খেল সাইনি। অলীক ভাবনার চোরাবালির ভেতর তলিয়ে যেতে যেতে উদ্ধার করতে পেরেছে সে নিজেকে।আর তক্ষুণি সাইনির মোবাইল বাজল। সাইনি হ্যালো বলতেই প্রিয়ম উচ্ছ্বসিত গলায় বলল— ম্যাডাম, দুরন্ত এক্সপ্রেসে রওনা দিচ্ছি। আমাদের মিটিং ক্যানসেল। বুবুনের জন্মদিন দারুণভাবে সেলিব্রেট করব।