September 9, 2014

প্রদর্শনী এবং আমি  মনোনীতা চক্রবর্তী

চারিদিকে সাজো সাজো রব— ঢাক বাজবে কিছু পরে
‘মা’— আসছেন ওদের  আঙিনায়— ওদেরই জন্য নৌকোতে।
শিউলি-কাশের ছোঁওয়াছুঁয়ি— মেঘ-মাদলের হাতছানি।
খেয়া ঘাটে আমি। ঠিক তখন!
একটা ছোট নৌকো— একজন মাঝি
সঙ্গে সে। দাঁড় বেয়ে নিয়ে গেল গন্তব্যে।
একটা গুমোট অস্বস্তি, চাপা অদম্য কৌতুহল
প্রদর্শনীর মেলায় আমি সঙ্গে সেই মেয়েটি।
প্রথম কক্ষ — মালা ঝোলানো ফ্রেমে আটা ছবি
একটা আগুন যুবক, একটি মেধাবী মনন
— আজ ইতিহাস!
দ্বিতীয় কক্ষ— পুত্রশোক, পক্ষাঘাতকে আলিঙ্গন করা এক জীর্ণ বৃদ্ধা
তৃতীয় কক্ষ— একমুখ দাড়ি, মাঝবয়সী পলাতক স্ত্রীর সন্তানদের ‘বাবা’
দুটো হাত কেটে বাদ দিতে হয়েছে
— একটা দুর্ঘটনা— কারখানার শ্রমিক
— আজ ইতিহাস!
চতুর্থ কক্ষ—উনিশ বা কুড়ি ভ্রুণহত্যাকারী এক অসহায় মা।
না, তার সীমন্তে কোন রং নেই।

— আজ বর্তমান।
বর্তমান ক্ষিদে— বর্তমান আব্র“—ঘুমন্ত সব ইচ্ছেরা।
রোজগার সেই মেয়েটি।
ক্ষয় সেই মেয়েটি।
রোগ সেই মেয়েটি।
দীর্ঘশ্বাস সেই মেয়েটিই।
দূরে তখন ঢাকের ধ্বনি, আলোর বাঁশিতে ভৈরবের আবাহন
            — মায়ের বোধন !!!

_______________
সেতু, উৎসব সংখ্যা ২০০৪


No comments: